বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কার্যক্রম

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ব্যবসায় উদ্যোগ - ব্যবসায় নৈতিকতা ও সামাজিক দায়িত্ব | | NCTB BOOK

ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব বহুযুগ ধরে অবহেলিত হয়ে আসলেও বর্তমানে দেশে বিদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান সামাজিক কার্যক্রমে এগিয়ে এসেছে। বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল কোম্পানি তাদের সাধারণ ব্যবসায় কার্যক্রমের সাথে বিভিন্ন সামাজিক দায়িত্ব পালন করছে। ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানি যেমন- টেলিটক, গ্রামীণ ফোন, রবি, বাংলা লিংক, সিটিসেল, এয়ারটেল প্রভৃতি দারিদ্র্য বিমোচন, মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার খরচ বহন, বৃত্তি প্রদান ও খেলাধুলার উন্নয়নে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। কিছু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তরুণ সমাজের প্রতিভা অনুসন্ধান ও বিকাশে এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামাজিক দায়িত্ব পালনের প্রবণতা বেশি দিনের নয়। আশা করা যায়, আমাদের শিল্পোদ্যোক্তা শ্রেণি মুনাফামুখী ব্যবসায় পরিচালনার সাথে সাথে সামাজিক উন্নয়নে সামাজিক দায়িত্ব পালনে আরো এগিয়ে আসবে।


পরিবেশ দূষণ ও ব্যবসায় (Environment Pollution and Business )

ব্যবসা বিশেষ করে শিল্পোন্নয়নের সবচেয়ে বড় সমস্যা পরিবেশ দূষণ। শিল্প বর্জ্য নির্গত তরল পদার্থ নদী- নালায় পড়ে পানি দূষিত করছে। বিষাক্ত পানি মাছসহ জলজ প্রাণী বাস করার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অন্যদিকে যত্রতত্র ময়লা নিক্ষেপ ও যান বাহনের ধোঁয়া বায়ু দূষিত করে। কারখানার মেশিন ও জেনারেটরের বিকট আওয়াজে ভয়াবহ শব্দ দূষণ হচ্ছে। এছাড়া শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার নামে অবাধে গাছ নিধন ও পাহাড় কেটে পরিবেশকে দূষণ করা হচ্ছে। আবাসনের নামে চাষের জমি হরণ, খাল বিল ভরাট করে আবাসন তৈরি, নদীভাঙ্গন, নির্বিচারে অনুপযুক্ত যানবাহন রাস্তায় চালানো ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ব্যবহার পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী। এতে মানুষের স্বাস্থ্যহানি তো হচ্ছেই তদুপরি জীব বৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে ।
দূষণের প্রভাবমুক্ত হতে সরকার আইন প্রণয়ন করেছে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ যথার্থভাবে হচ্ছে না বলে পরিবেশ দূষণ বেড়েই চলছে। পরিবেশ দূষণের অন্য কারণগুলোর মধ্যে জনগণের অসচেতনতা, যেখানে সেখানে ময়লা নিক্ষেপ ও ত্রুটিপুর্ণ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাও দায়ী।
তাছাড়া পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা পেতে হলে গণমাধ্যমের সাহায্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, আইনের যথার্থ প্রয়োগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নতিকরণ এবং পাঠ্যসূচিতে পরিবেশ দূষণ কোর্স অন্তর্ভুক্তি একান্ত আবশ্যক ।


পরিবেশ দূষণরোধে ব্যবসায়ীদের দায়বদ্ধতাঃ

প্রায় প্রতিটি কারখানা থেকে বর্জ্য বের হয়ে থাকে । যেমন-চামড়াজাত শিল্প, কাপড়ের রং ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ক্যামিকেল ব্যবহৃত হয়ে থাকে । তাই কারখানার বর্জ্য কোনো অবস্থায় প্রবাহমান নদী, খাল-বিল বা জলাশয়ে ফেলা উচিত নয়, সেক্ষেত্রে কারখানার মালিক বা ব্যবসায়ীদের কারখানা প্রতিষ্ঠা এবং চালু অবস্থায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে । এজন্য প্রতিটি কারখানার বর্জ্য শোধনাগার থাকা
বাধ্যতামূলক করতে হবে ।

Content added By
Promotion